Skip to main content

Imambara murshidabad

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের স্বর্ববৃহৎ ঐতিহাসিক নির্দশন ইমামবাড়া। মুর্শিদাবাদ জেলার লালবাগ মহকুমার অন্তর্গত। এই নিদর্শনটির নির্মাতা নবাব নাজিম ফেরাদুন জাঁ।নিজামত ইমামবাড়া বা হাজারদুয়ারী ইমামবাড়া পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে হাজারদুয়ারি প্রাসাদের উত্তরে (সম্মুখে) অবস্থিত। ইমামবাড়াটি কেবল পশ্চিমবঙ্গেই না, সমগ্র ভারতে এটি সর্ববৃহৎ (২০৭ মিটার)। প্রাথমিক পর্যায়ে ন়বাব সিরাজউদ্দৌলা ইমামবাড়াটিকে কাঠ দ্বারা নির্মাণ করেছিলেন। কিন্তু ১৮৪৬ সালে এক ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ইমামবাড়াটি সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। পরবর্তীতে ১৮৪৭ সালে হুমায়ুন জাঁ এর ছেলে নবাব নাজিম মনসুর আলী ফেরাদুন জাঁ প্রায় সাত লাখ রুপি ব্যায়ে দ্বিতল ইমামবারাটি পুনঃনির্মাণকরেন।ইমামবাডা় প্রাসাদের মধ্যবর্তী স্থানে নির্মিত হয়েছে একটি ছোট আকৃতির দরগা বা মদিনা মসজিদ। দরগার বারান্দা রঙিন টাইলস দ্বারা অলংকৃত এবং এর মধ্যে রয়েছে হযরত মহম্মদ (সা.) এর মদিনার রওজা মোবারকের অনুরূপ একটি প্রতিকৃতি।প্রতি বছর ইসলাম বর্ষের মহরম মাসের এক থেকে দশ তারিখ পর্যন্ত ইমামবাড়াটি দর্শণার্থীদের জন্য খুলে দেয়া হয়।বহু দুরদূরান্তের মুসলমান ভক্ত ও পার্শ্বর্তী হিন্দুরা ও মুসলমানদের শিয়া সম্প্রদায় এই মহরমপর্ব দেখতে আসেন ।সে সময় দশদিন যাবৎ অন্ধ ,খঞ্জ, দরিদ্র নবাবের আমলে এই মহরম-এ ইমাবাড়াতে অবস্থান করতেন সকলকে পেট ভরে খাওয়াছাড়াও কিছু কিছু অন্ন বস্ত্র লাভ করে নবাবের গুনগান জয়গান করতে করতে স্বস্থানে ফিরে যেতেন। এজন্য নবাবের খাজাঞ্চিখানা থেকে প্রচুর টাকার বরাদ্দ থাকত। মহরমেরশেষ দিন, অর্থাৎ কারবালা প্রান্তরে হাসান হোসেনের নকল মৃতদেহ বহন কালে ওতে বহু মুল্যবান বস্ত্র ,রত্ন অলংঙ্কার সবাধারে আচ্ছাদিত করে ইমামবাড়া থেকে কারবালা পর্যন্ত তিন কিমি রাস্তা অতিক্রম করত।সবযাত্রার অংশগ্রহণকারী সকলেই নগ্নপদে ও কালো পোষাক পরে বুক চাপড়াতে চাপড়াতে ''হায় হোসেন হায় হোসেন" আর্তনাদ সহকারে মাতাম করতে করতে পৈাছাতো উক্ত কারবালাতে। বর্তমানে এই মহরম পালিত হলেও অর্থাভাবের দরুন জৌলুস প্রায় ৮০% কমে গিয়েছে।

Comments

Popular posts from this blog

Rumpa bidroho

রুম্পা বিদ্রোহদক্ষিণ ভারতের গোদাবরী অঞ্চলের রুম্পা আদিবাসীদের সশস্ত্র বিদ্রোহ(১৮৭৮-১৮৮০)উনবিংশ শতকের সপ্তম দশকে মাদ্রাজ প্রদেশ জুড়ে প্রবল দুর্ভিক্ষে ৫০ লক্ষ মানুষ প্রান হারান। ১৮৭৬ এর ২৩ শে নভেম্বর অমৃত বাজার পত্রিকা এই দুর্ভিক্ষের কারণ হিসেবে বৃটিশ শাসকের শোষন, উদাসীনতাকে দায়ী করেছিল। জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর কলকাতাবাসীর কাছে দুর্ভিক্ষপীড়িতমানুষদের সাহায্যার্থে অর্থদানের আবেদন করলেও বিশেষ সাড়া পাওয়া যায়নি। এই ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের ভেতরেই উপুর্যপরি শোষন, বনাঞ্চল সংক্রান্ত বাধানিষেধ ও করের বোঝা দক্ষিণ ভারতে পর্বত-অরন্যচারীরুম্পা আদিবাসীদের ভেতর তীব্র ক্ষোভের জন্ম দেয়।রুম্পা সম্প্রদায় ছিল গোষ্ঠীমূলক। সমাজে সব কাজই একত্রিত সিদ্ধান্তে হতো। সুতরাং সকলেই মিলিতভাবে বিদ্রোহের সিদ্ধান্ত নেয়। এদের প্রধান নেতা ছিলেন চান্দ্রিয়া। লিংগম রেড্ডি, থুমন ধোরা প্রমুখ অন্যান্য নেতারাও বিদ্রোহ পরিচালনা করেন। তারা থানা আক্রমন, অগ্নিসংযোগ, সরকারী কর্মচারীদের হত্যা ও ভদ্রাচলম, বিশাখাপত্তনম তথা পূর্ব গোদাবরী অঞ্চলে নিজেদের অধিকার কায়েম করলে সশস্ত্র পুলিশবাহিনীর সাথে খন্ডযুদ্ধ হয়, উন্নত আগ্নেয়াস্ত্র ও স...

Rajput history

ইতিহাসের পথ ধরে চলুন ফিরে যাই ১৭৩০ সালে। পশ্চিম রাজস্থানের মাড়োয়াড় অঞ্চলের খেজার্লি গ্রামে। আমরা ইতিহাসে পড়েছি চিরকালই রাজস্থান বিখ্যাত ছিল যুদ্ধবিগ্রহ, দখল ও রক্তপাতের জন্য। কিন্তু যেটা ইতিহাসে নেই তা হল প্রকৃতি ও জীবজগৎ বাঁচিয়ে নিজেরা বেঁচে থাকার এক জীবনদর্শনও শিখিয়েছে জলহীন এই রাজপুতনা। এই হিংসার দুনিয়ায় একটি ব্যতিক্রমের মতো রয়েছে বিষ্ণোই সম্প্রদায় যারা আজও প্রকৃতির সঙ্গে জড়িয়ে বাঁচায় বিশ্বাসী। লুন্ঠন, কেড়ে খাওয়া বা ফসলের জন্য রাজ্যবিস্তারের পরম্পরার উল্টোপথে হেঁটে প্রকৃতিকে বাঁচিয়ে নিজেরা বাঁচার দর্শনে বিশ্বাস করাবিষ্ণোই সম্প্রদায় গাছ কেটে পরিবেশ ধ্বংসের পথে বোধহয় পৃথিবীতে প্রথমবার (ভারতে তো বটেই) রুখে দাঁড়িয়েছিল।আগে দেখে নেওয়া যাক কারা এই বিষ্ণোই সম্প্রদায়। কথিত আছে, রাজস্থানের পিপাসার গ্রামে ১৪৫১ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন জাম্বেশ্বর নামে এক ব্যক্তি। তিনিই পরবর্তীকাল প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন এই বিষ্ণোই সম্প্রদায়। বিষ্ণুর উপাসনা করতেন জাম্বেশ্বর। যে কারণে সম্প্রদায়ের নাম হয় বিষ্ণোই।গুরু জাম্বেশ্বর তার ভক্তদের বলেছিলেন, প্রকৃতিকে বাঁচানোর কথা। সুস্থভাবে বাঁচতে হলে যে পশু-পাখি-গাছপালারও প্...

Gilgamas

পৃথিবীর প্রাচীনতম মহাকাব্য গিলগামেস সুমেরিও সভ্যতায় গড়ে ওঠা সমাজে,আজ থেকে প্রায় চার হাজার বছর আগে,এক অনামি কবির হাতে কিউনিফর্ম ভাষায় রচিত হয় গিলগামেস মহাকাব্য। যেকোন মহাকাব্যই একটি সমাজ জীবনের পরিপ্রক্ষিতে রচিত হয়েছে। বহু বছর ধরে কাহিনীগুলি মানুষের মুখে মুখে বাহিত হতে থাকে। লিখিত আকারের মধ্যেও এর মূল চরিত্রগুলি এক থাকলেও,সময়ভেদে এবং অন্চলভেদে কাহিনীর মধ্যে কিছু কিছু পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। যদিও মূল কাঠামোর কোন পরিবর্তন হয় না। যে সমাজকে কেন্দ্র করে কাহিনী গড়ে ওঠে, তার স্বরূপটি খুঁজে পেতে তাই অসুবিধা হয় না। গিলগামেসের কাহিনীও ঠিক এরকমই একটি।সর্বপ্রথম ব্রিটিস মিউজিয়ামের পক্ষ থেকে অস্টিন হেনরি লেয়ার্ড, ১৮৫০ সাল নাগাদ, বর্তমান ইরাকে খনন কার্য চালিয়ে প্রাচীন সুমেরিও সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ আবিস্কার করেন। তিনি কিউনিফর্ম ভাষায় লিখিত প্রায় ২০,০০০ মাটির ট্যাবলেট বা টালি ব্রিটিস মিউজিয়ামে পাঠান। শুরু হয় অ্যাসিরিওলজির উপর গবেষনা। কিউনিফর্মভাষার পাঠোদ্ধারের কাজ। পরে আরো অনেক উৎস থেকে প্রায় ৭৫,০০০ এই ধরনের ট্যাবলেট ম্যানিস্ক্রিপ্টউদ্ধার হয়। যার মধ্যে অনেকগুলিই ভাঙা-চোরা। কিউনিফর্ম ভাষা পড়তে পারে হাতে ...