Skip to main content

Atlantis

উন্নত সভ্যতার বাসিন্দারা এই শহর তৈরি করেছিল। ঈশ্বরের রোষে রাতারাতি ধ্বংস হয়ে সমুদ্রে তলিয়ে যায় এই শহর ও সভ্যতা।সেই শহরের কথা মানুষ জানে অন্তত পক্ষে আড়াই হাজার বছরআগে থেকে। প্রাচীন গ্রিক দার্শনিক প্লেটো ৩৬০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে এই শহর তথা সভ্যতার কথা লিখে গিয়েছিলেন। তার পর থেকে পল্লবিত হয়েছে লস্ট আটলান্টিসের কাহিনি। যুগে যুগে মানুষ সন্ধান করেছে এই শহরের।লস্ট আটলান্টিস সম্পর্কে প্রচলিত ধারণা এই— এক উন্নত সভ্যতার বাসিন্দারা এই শহর তৈরি করেছিল। ঈশ্বরের রোষে রাতারাতি ধ্বংস হয়ে সমুদ্রে তলিয়ে যায় এই শহর ও সভ্যতা। কোথায় ছিল এই শহর, তা খুঁজতে মানুষ কখনও অনুমান করছে সিসিলি, মল্টা, সাইপ্রাসের আশপাশ, কখনও বা অতলান্তিক মহাসাগরের অথই নীলে তাকে সন্ধান করেছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত তার কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি। কেবল পল্লবিত হয়েছে কিংবদন্তি, রচিত হয়েছে একের পরে এক সাহিত্য।সম্প্রতি ‘ব্রাইট ইনসাইট’ নামের এক ইউটিউব চ্যানেল আফ্রিকার সাহারা মরুভূমির একটি স্থানকে হারিয়ে যাওয়াআটলান্টিস শহর বলে দাবি করে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। তাদের দাবি, প্লেটোর বর্ণনার সঙ্গে এই স্থানটির হুবহু মিল রয়েছে।উত্তর পশ্চিম আফ্রিকার মরিটানিয়ার ওউয়াডেনে অবস্থিত রিচ্যাট স্ট্রাকচার নামে এক সুবিশাল গোলাকৃতি পাথুরেএলাকাকেই এই ইউটিউব চ্যানেল আটলান্টিসের ধ্বংসাবশেষ বলে দাবি করেছে।‘সাহারার চোখ’ নামে পরিচিত এই অঞ্চল কোনও উল্কাপাতের ফলে সৃষ্ট হয়েছিল বলে অনুমান করেন ভূতাত্ত্বিকরা। ‘ব্রাইট ইনসাইট’-এর দাবি, এটাই হারিয়ে যাওয়া আটলান্টিস শহর। প্লেটো তাঁর রচনায় জানিয়েছিলেন, ১১৬০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ নাগাদ আটলান্টিস ধ্বংস হয়। এই সময়ে এক ধূমকেতু পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়েছিল বলে জানান বিজ্ঞানীরাও। এর এই আঘাতের ফলেই সৃষ্টি হয়েছিল তুষার যুগের।গুগল ম্যাপ-এর হিসেব অনুযায়ী, রিচ্যাট স্ট্রাকচারের ব্যাস ২৩.৫ কিলোমিটার। প্লেটোর বর্ণনা জানায়, এই ব্যাসছিল ২৩.৪৯ কিলোমিটার। প্লেটো বলেছিলেন, আটলান্টিসের দু’দিকে সমুদ্র ছিল। আজকের স্যাটেলাইট-চিত্রে সেটাও স্পষ্ট। আটলান্টিসের উত্তরে একটি পর্বতমালার কথাও প্লেটো লিখেছিলেন। সেটাও রিচ্যাট স্ট্রাকচারের সঙ্গে মিলে যায়। তাছাড়া একথাও সত্য, আটলান্টিসকে প্লেটো দেখেননি। তিনি প্রাচীন গ্রিক রাজনীতিবিদ সোলোনের বর্ণনার উপরে নির্ভর করেই তাঁর বর্ণনা নির্মাণ করেছিলেন। প্রসঙ্গত, সোলোনও আটলান্টিসের সমসাময়িক নন। তিনিও তাঁর পূর্বজদের বর্ণনা অনুসরণ করেছিলেন।‘ব্রাইট ইনসাইট’-এর এই ভিডিও বিপুল চাঞ্চল্য ফেলেছে নেট-দুনিয়ায়। এতগুলো বিষয়ের সমাপতন দেখে অনেকেই হারিয়ে যাওয়া আটলান্টিস বলে চিহ্নিত করছেন রিচ্যাট স্ট্রাকচারকে। পাশাপাশি, অনেকেই এই তত্ত্ব মানতে অস্বীকার করেছেন। তাঁদের মতে, এটি একান্ত ভাবেই প্রকৃতি-সৃষ্ট একটি অঞ্চল। অহেতুক এটিকে মহিমান্বিত করা হচ্ছে।

Comments

Popular posts from this blog

Rumpa bidroho

রুম্পা বিদ্রোহদক্ষিণ ভারতের গোদাবরী অঞ্চলের রুম্পা আদিবাসীদের সশস্ত্র বিদ্রোহ(১৮৭৮-১৮৮০)উনবিংশ শতকের সপ্তম দশকে মাদ্রাজ প্রদেশ জুড়ে প্রবল দুর্ভিক্ষে ৫০ লক্ষ মানুষ প্রান হারান। ১৮৭৬ এর ২৩ শে নভেম্বর অমৃত বাজার পত্রিকা এই দুর্ভিক্ষের কারণ হিসেবে বৃটিশ শাসকের শোষন, উদাসীনতাকে দায়ী করেছিল। জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর কলকাতাবাসীর কাছে দুর্ভিক্ষপীড়িতমানুষদের সাহায্যার্থে অর্থদানের আবেদন করলেও বিশেষ সাড়া পাওয়া যায়নি। এই ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের ভেতরেই উপুর্যপরি শোষন, বনাঞ্চল সংক্রান্ত বাধানিষেধ ও করের বোঝা দক্ষিণ ভারতে পর্বত-অরন্যচারীরুম্পা আদিবাসীদের ভেতর তীব্র ক্ষোভের জন্ম দেয়।রুম্পা সম্প্রদায় ছিল গোষ্ঠীমূলক। সমাজে সব কাজই একত্রিত সিদ্ধান্তে হতো। সুতরাং সকলেই মিলিতভাবে বিদ্রোহের সিদ্ধান্ত নেয়। এদের প্রধান নেতা ছিলেন চান্দ্রিয়া। লিংগম রেড্ডি, থুমন ধোরা প্রমুখ অন্যান্য নেতারাও বিদ্রোহ পরিচালনা করেন। তারা থানা আক্রমন, অগ্নিসংযোগ, সরকারী কর্মচারীদের হত্যা ও ভদ্রাচলম, বিশাখাপত্তনম তথা পূর্ব গোদাবরী অঞ্চলে নিজেদের অধিকার কায়েম করলে সশস্ত্র পুলিশবাহিনীর সাথে খন্ডযুদ্ধ হয়, উন্নত আগ্নেয়াস্ত্র ও স...

Rajput history

ইতিহাসের পথ ধরে চলুন ফিরে যাই ১৭৩০ সালে। পশ্চিম রাজস্থানের মাড়োয়াড় অঞ্চলের খেজার্লি গ্রামে। আমরা ইতিহাসে পড়েছি চিরকালই রাজস্থান বিখ্যাত ছিল যুদ্ধবিগ্রহ, দখল ও রক্তপাতের জন্য। কিন্তু যেটা ইতিহাসে নেই তা হল প্রকৃতি ও জীবজগৎ বাঁচিয়ে নিজেরা বেঁচে থাকার এক জীবনদর্শনও শিখিয়েছে জলহীন এই রাজপুতনা। এই হিংসার দুনিয়ায় একটি ব্যতিক্রমের মতো রয়েছে বিষ্ণোই সম্প্রদায় যারা আজও প্রকৃতির সঙ্গে জড়িয়ে বাঁচায় বিশ্বাসী। লুন্ঠন, কেড়ে খাওয়া বা ফসলের জন্য রাজ্যবিস্তারের পরম্পরার উল্টোপথে হেঁটে প্রকৃতিকে বাঁচিয়ে নিজেরা বাঁচার দর্শনে বিশ্বাস করাবিষ্ণোই সম্প্রদায় গাছ কেটে পরিবেশ ধ্বংসের পথে বোধহয় পৃথিবীতে প্রথমবার (ভারতে তো বটেই) রুখে দাঁড়িয়েছিল।আগে দেখে নেওয়া যাক কারা এই বিষ্ণোই সম্প্রদায়। কথিত আছে, রাজস্থানের পিপাসার গ্রামে ১৪৫১ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন জাম্বেশ্বর নামে এক ব্যক্তি। তিনিই পরবর্তীকাল প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন এই বিষ্ণোই সম্প্রদায়। বিষ্ণুর উপাসনা করতেন জাম্বেশ্বর। যে কারণে সম্প্রদায়ের নাম হয় বিষ্ণোই।গুরু জাম্বেশ্বর তার ভক্তদের বলেছিলেন, প্রকৃতিকে বাঁচানোর কথা। সুস্থভাবে বাঁচতে হলে যে পশু-পাখি-গাছপালারও প্...

Gilgamas

পৃথিবীর প্রাচীনতম মহাকাব্য গিলগামেস সুমেরিও সভ্যতায় গড়ে ওঠা সমাজে,আজ থেকে প্রায় চার হাজার বছর আগে,এক অনামি কবির হাতে কিউনিফর্ম ভাষায় রচিত হয় গিলগামেস মহাকাব্য। যেকোন মহাকাব্যই একটি সমাজ জীবনের পরিপ্রক্ষিতে রচিত হয়েছে। বহু বছর ধরে কাহিনীগুলি মানুষের মুখে মুখে বাহিত হতে থাকে। লিখিত আকারের মধ্যেও এর মূল চরিত্রগুলি এক থাকলেও,সময়ভেদে এবং অন্চলভেদে কাহিনীর মধ্যে কিছু কিছু পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। যদিও মূল কাঠামোর কোন পরিবর্তন হয় না। যে সমাজকে কেন্দ্র করে কাহিনী গড়ে ওঠে, তার স্বরূপটি খুঁজে পেতে তাই অসুবিধা হয় না। গিলগামেসের কাহিনীও ঠিক এরকমই একটি।সর্বপ্রথম ব্রিটিস মিউজিয়ামের পক্ষ থেকে অস্টিন হেনরি লেয়ার্ড, ১৮৫০ সাল নাগাদ, বর্তমান ইরাকে খনন কার্য চালিয়ে প্রাচীন সুমেরিও সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ আবিস্কার করেন। তিনি কিউনিফর্ম ভাষায় লিখিত প্রায় ২০,০০০ মাটির ট্যাবলেট বা টালি ব্রিটিস মিউজিয়ামে পাঠান। শুরু হয় অ্যাসিরিওলজির উপর গবেষনা। কিউনিফর্মভাষার পাঠোদ্ধারের কাজ। পরে আরো অনেক উৎস থেকে প্রায় ৭৫,০০০ এই ধরনের ট্যাবলেট ম্যানিস্ক্রিপ্টউদ্ধার হয়। যার মধ্যে অনেকগুলিই ভাঙা-চোরা। কিউনিফর্ম ভাষা পড়তে পারে হাতে ...