সালটা ১৯৭৪, চীনের জিয়ান শহরে উপস্থিত হলেন একদল আর্কিওলজিস্ট। তাঁদের লক্ষ্য প্রথম চীনা সম্রাট কিন-সি-হুয়াংয়েরকবর খুঁড়ে সার্চ চালানো। সম্রাটের সমাধি খুঁড়তে গিয়ে অবশ্য তাঁরা এমন এক জিনিস আবিষ্কার করে ফেললেন যাতে পুরো বিশ্বকেই নড়েচড়ে বসতে হয়েছিলো!.সম্রাটের সমাধি খুঁড়ে তারা পেয়েছিলেন বিশাল এক সৈন্যের বহর। কিন্তু এই পুরো মিলিটারি বাহিনীর একজনও রক্তমাংসের তৈরি না। এরা হলো টেরাকোটা আর্মি!তৎকালীন চীন সম্রাটদের পাগলামির এক অদ্ভুত নিদর্শন!.কিন-সি-হুয়াং ছিলেন চীনের সর্বপ্রথম সম্রাট। পুরো পূর্ব চীন জুড়ে ছিলো তার কিন (Qin) সাম্রাজ্যের বিস্তৃতি। তাঁর বাপদাদারা সবাই রাজা উপাধি নিলেও ওভারস্মার্ট কিন রাজা উপাধিকে কমন ভেবে নিলেন এম্পেরর বা সম্রাট উপাধি, অর্থাৎ রাজাধিরাজ - রাজাদের রাজা।.অবশ্য এ উপাধি নেয়ার মত কারণও ছিলো। কিন মহাশয়ের সাম্রাজ্য ছিলো গোটা চীনের আড়াই ভাগের এক ভাগ, কমসেকম প্রায় চল্লিশটি বাংলাদেশের সমান। অবশ্য যদিও তাং রাজবংশের শাসন আরো বেশি এলাকাজুড়ে ছিলো, আমরা আপাতত কিন-তাং জমি নিয়ে ঝগড়াতে যাচ্ছিনা।.কথা হলো কিন-সি-হুয়াং ছিলেন মোটামুটি স্পেশাল টাইপ সম্রাট। তাঁর স্পেশালিটির এক চমৎকার উদাহরণ হলো দি গ্রেট ওয়াল অব চায়না, বিশ্বের সপ্তাশ্চর্যের একটি।হুণসহ বিভিন্ন যাযাবর হামলাকারীদের ঠেকাতে এই ওয়াল বানানো হয়, যার কথা তোলা থাকলো অন্য কোনোদিনের জন্য।.আর্কিওলজিস্টরা কিনের সমাধি খুঁড়ে পেয়েছিলেন হরেক রকমের জিনিস, মাটি থেকে শুরু করে ধাতুর, সোনারূপা কাঠও ছিলো। তবে সবচে অবাক করা আবিষ্কার ছিলো টেরাকোটা আর্মি!!.এ যেনো এক বিশাল চীনা মিলিটারির লাইন, সবাই অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত, গায়ে ঝুলছে হাই রেংকের ড্রেস। কিন্তু কেউই জীবন্ত না, সবাই পোড়ামাটির তৈরি। কিন্তু নিঁখুত গড়নের।.এরকম সৈন্যের সংখ্যা ছিলো হাজারের ওপর। সমাধিতে বড় বড় তিনটি কক্ষ জুড়ে সারিবদ্ধ ছিলো সেনারা, সাথে ছিলো অস্ত্রশস্ত্র। আর একটি কক্ষ ছিলো খালি। একটা কাকপক্ষীও নেই সেখানে।.আর্কিওলজিস্টদেরধারণা মৃত্যুর পর সম্রাট তাঁর প্রটেকশনের জন্যই এই আর্মি বানিয়েছিলেন। তাঁর ধারণা ছিলো তিনি অমর, মৃত্যু শেষে জেগে ওঠবেন আবারো। তখন এই সৈন্যরা তাঁকে বিশ্বজয়ে সাহায্য করবে।.শোনা যায় চীনের বিখ্যাত হলদে নদীর তীরে একবার এক উল্কাপাত হয়। তা দেখে গ্রামের লোকেরা মন্তব্য করে যে এটা সম্রাটের মৃত্যুর সংকেত।.সম্রাট কিন-সি-হুয়াং তা শুনে পুরো গ্রামটির সব মানুষকে হত্যা করেন, জ্বালিয়ে দেন উল্কাসহ পুরো গ্রাম।অদ্ভুতভাবে ঠিক তার কিছুদিনের মাথায় তাঁর মৃত্যু হয়, তখন তাঁর বয়স হয়েছিলো মাত্র ঊনপঞ্চাশ বছর....যদিও সম্রাটের মৃত্যুর পর আজপর্যন্ত দুইহাজারেরও বেশি বছর পেরিয়ে গেছে, স্থানীয়দের মাঝে এখনো জনশ্রুতি ঘোরে, যে একটা সময় অবশ্যই এই টেরাকোটা সৈন্যরা চোখ মেলবে। শুরু করবে ধ্বংসলীলা।সেই সময়টা কখন তা অবশ্য কেউ জানেনা।.চীনা সরকারের ছত্রছাত্রায় বর্তমানে সংরক্ষিত সম্রাট কিনের সেই বিখ্যাত সমাধি।.আর তার নীচে আঁধার ঘরে অতন্দ্র প্রহরীর মত দাঁড়িয়ে আছেহাজার হাজার মাটির তৈরি সৈনিক।.মানুষ জাতির আজব খামখেয়ালির এক যোগ্য উদাহরণ হয়ে রয়ে গেছে তারা।.কিংবা হয়তো সত্যি সত্যিই অপেক্ষা করছে কোনো একদিন চোখ মেলে দুহাজার বছরের নতুন দুনিয়াটা দেখার জন্য!.কে জানে!
রুম্পা বিদ্রোহদক্ষিণ ভারতের গোদাবরী অঞ্চলের রুম্পা আদিবাসীদের সশস্ত্র বিদ্রোহ(১৮৭৮-১৮৮০)উনবিংশ শতকের সপ্তম দশকে মাদ্রাজ প্রদেশ জুড়ে প্রবল দুর্ভিক্ষে ৫০ লক্ষ মানুষ প্রান হারান। ১৮৭৬ এর ২৩ শে নভেম্বর অমৃত বাজার পত্রিকা এই দুর্ভিক্ষের কারণ হিসেবে বৃটিশ শাসকের শোষন, উদাসীনতাকে দায়ী করেছিল। জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর কলকাতাবাসীর কাছে দুর্ভিক্ষপীড়িতমানুষদের সাহায্যার্থে অর্থদানের আবেদন করলেও বিশেষ সাড়া পাওয়া যায়নি। এই ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের ভেতরেই উপুর্যপরি শোষন, বনাঞ্চল সংক্রান্ত বাধানিষেধ ও করের বোঝা দক্ষিণ ভারতে পর্বত-অরন্যচারীরুম্পা আদিবাসীদের ভেতর তীব্র ক্ষোভের জন্ম দেয়।রুম্পা সম্প্রদায় ছিল গোষ্ঠীমূলক। সমাজে সব কাজই একত্রিত সিদ্ধান্তে হতো। সুতরাং সকলেই মিলিতভাবে বিদ্রোহের সিদ্ধান্ত নেয়। এদের প্রধান নেতা ছিলেন চান্দ্রিয়া। লিংগম রেড্ডি, থুমন ধোরা প্রমুখ অন্যান্য নেতারাও বিদ্রোহ পরিচালনা করেন। তারা থানা আক্রমন, অগ্নিসংযোগ, সরকারী কর্মচারীদের হত্যা ও ভদ্রাচলম, বিশাখাপত্তনম তথা পূর্ব গোদাবরী অঞ্চলে নিজেদের অধিকার কায়েম করলে সশস্ত্র পুলিশবাহিনীর সাথে খন্ডযুদ্ধ হয়, উন্নত আগ্নেয়াস্ত্র ও স...
Comments
Post a Comment