যেভাবে থেমে গেল দুর্দর্শ মোঙ্গলবাহিনীর জয়রথবলতে দ্বিধা নেই মানব সভ্যতার ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়ংকর সেনাবাহিনী হল মধ্যযুগের মোঙ্গল বাহিনী যার সূচনা হয়েছিল চেঙ্গিস খানের হাতে। মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপে তাতার বাহিনী নামে পরিচিত ছিল মোঙ্গল বাহিনী। ১২০৬ সালে চেঙ্গিস খানকে মঙ্গোলিয়ার স্তেপের একচ্ছত্র অধিপতি বা গ্রেট খান হিসাবে ঘোষণা করার পর মোঙ্গল বাহিনী একে একে জয় করে নিয়েছিল এশিয়া ও ইউরোপ বিস্তীর্ণ অঞ্চল।ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সাম্রাজ্যের মালিক ছিল মোঙ্গলরা।চেঙ্গিসখানের সময় থেকে শুরু হওয়া মোঙ্গলদের জয়যাত্রাঅব্যাহত ছিল পরবর্তী গ্রেট খানদের সময়ও। ভাবতে অবাক লাগে ১২০৬ সাল থেকে ১২৬০ সাল এই অর্ধশত বছরে তাঁরা একটি যুদ্ধেও হারেন নি। বাগদাদ, সমরখন্দ, পারস্য, রাশিয়া, আফগানিস্থান, বেইজিং, বুখারা, আলেপ্পোর মত বড় বড় শহর তাতারি হামলায় মাটির সাথে মিশে গিয়েছিল। কি পূর্ব কি পশ্চিম এমন একটিও রাজ্য ছিলনা যারা মোঙ্গলদের গতি পথে বিন্দুমাত্র বাঁধা সৃষ্টি করতে পেরেছিল। বিশ্বজয়ের যে আকাঙ্খা অপূর্ণ রেখে মারা গিয়েছিলেন চেঙ্গিস খান, তার পুত্র ও পৌত্ররা সেইটার যেন সত্য করতে যাচ্ছিলেন। তাঁদের বর্বরতায় ইউরোপ ও এশিয়ার কোটি কোটি নিরীহ মানুষ প্রাণ দিয়েছ অনেকটা বিনা প্রতিরোধে। তাই সারা পৃথিবীর মানুষ ভাবতে শুরু করেছিল মোঙ্গলদের থামানো বোধ হয় অসম্ভব। কিন্তু ১২৬০ সালে হঠাৎই থেমে গেল অপ্রতিরোধ্য মোঙ্গলদের জয়রথ। এক অসাধ্য সাধন হল ফিলিস্তিনের গাজার অদূরে আইন জালুত প্রান্তরে। মোঙ্গল প্রথম পরাজয়ে সেই অবিশ্বাস্য কাহিনী নিয়ে লেখা হয়েছে এই প্রতিবেদনটি।পটভূমিমোঙ্গলদের উত্থানের যুগে মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলো বেশ কয়েকটি ছোট ছোট বিচ্ছিন্ন রাজ্যে বিভক্ত ছিল যেটা ইসলামের উত্থানের শুরু থেকে তখন পর্যন্ত ৬০০ বছরের ইতিহাসে কখনও ঘটেনি। ইসলামী খিলাফত তখন আব্বাসীয়দের হাতে। নাম মাত্র আব্বাসীয় খলিফাদের রাজধানী ছিল বাগদাদে। খলিফা হারুন উর রশিদ, খলিফা মুহতাসিম বিল্লাহ কিংবা খলিফা মামুন, মনসুর ও মুন্তাসিরদের পরাক্রম তখন কেবলই সাবেক। বাস্তবের আব্বাসীয় শাসকরা আধ্যাত্নিক কিংবা সামরিক কোন ক্ষেত্রেই পূর্বসুরীদের ধারের কাছেও ছিলেন না। আব্বাসীয় খিলাফত তখন অন্তর কোন্দল এবং ভোগবিলাসে মত্ত। এরকম অবস্থায় মোঙ্গলদের গ্রেট খান ছিলেন মঙ্গে খান। তাঁরই ভাই হালাকু তখন মধ্যপ্রাচ্যে মোঙ্গল বাহিনীর দায়িত্বে। মঙ্গলরা ধর্ম ছিল একধরণের শামানবাদ এই শামানবাদ হল একধরণের তান্ত্রিকতা। শামানবলতে বুঝায় ওঝা তাদের ধর্ম ছিল প্রাচীন চীন ও মঙ্গোলদের তেনগ্রিবাদ যা বর্তমানে বিলুপ্ত। তাদের দেবতা ছিল তেনগ্রি যিনি ছিলেন মঙ্গোল যাযাবরদের বিশ্বাসনুযায়ী আকাশ ও আগুনের দেবতা। চেঙ্গিস খান মারা যাবার অনেক পরে তারা বেশীর ভাগই বৌদ্ধধর্মে দিক্ষিত হয়। আর হালাকু খান ছিলেন বৌদ্ধ তাই ধর্মীয় কারণে সুনজরে দেখতেন না বাগদাদের আব্বাসীয় খিলাফতকে।তার উপর আব্বাসীয় খিলাফিতের সঞ্চিত রাশি রাশি ধন ভান্ডার হালাকু খানকে প্ররোচিত করেছিল বাগদাদ আক্রমণে। হালাকু খানের আক্রমণে মাটির সাথে মিশে যায় বাগদাদ। ইতিহাসের নজিরবিহীন বর্বরতায় বাগদাদে প্রাণ হারান প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ।শুধু বাগদাদ ধ্বংস করেই হালাকু খানের বাহিনী থেমে থাকেনি। ইরাক থেকে সিরিয়া হয়ে তাঁরা এগিয়ে চলছিলেন মিশরের দিকে। পথে সিরিয়ার দামেস্ক ও আলেপ্পোর পতন হয় তাঁদের হাতে। সেই শহরের মানুষগুলোকেও বরণ করতে হয়েছিল বাগদাদবাসীর মত ভয়াবহ পরিণতি। মোঙ্গলদের ভয়ে সিরিয়া থেকে পালিয়ে তখন দলে দলে মানুষ আশ্রয় নিচ্ছিল মিশরে। এদিকে হালাকুর পরবর্তী পরিকল্পনা ছিল মিশর দখল করা। কেননা তখনকার সময়ে মিশর জয় করার অর্থ সমগ্র উত্তর আফ্রিকা জয় করে ফেলা। আর উত্তর আফ্রিকা থেকে জিব্রাল্টার হয়ে একবার স্পেনে ঢোকার মানে হল নিমিষেই ইউরোপকে পদানত করা। সেটি করতে পারলেই পূর্ণ হবে পিতামহ চেঙ্গিসের বিশ্ব জয়ের স্বপ্ন। তাই মোঙ্গলদের বিশ্ব জয়ের স্বপ্নে একমাত্র বাঁধা তখন মিশরের তরুণ সুলতান সাইফউদ্দিন কুতুজ।মিশর আক্রমণসিরিয়া থেকে মিশর আক্রমণের পূর্বে হালাকু খান মোঙ্গলদের স্বভাব সুলভ “হয় আত্মসমর্পণ নয় ভয়াবহ মৃত্যু” এই হুমকি দিয়ে চিঠি পাঠালেন মিশরের সুলতানের কাছে। সেই চিঠির ভাষা এতটাই ভয়ঙ্কর যে চিঠিটি প্রিয় পাঠকদের জন্য অনুবাদ করে দেওয়া হল যাতে বোঝা যায় মোঙ্গলদের হুমকি আসলে কতটা পিলে চমকানো। আমাদের তরবারির ভয়ে পালিয়ে যাওয়া মিশরের মামলুক সুলতান কুতুজের প্রতি পূর্ব ও পশ্চিমের সকল রাজার রাজাধিরাজ বিশ্বধিপতি খানের ফরমান–“অন্যদেশগুলোর ভাগ্যে কী ঘটেছিল তোমার সেটা চিন্তা করে আমাদের কাছে আত্মসমর্পণ করা উচিত। তুমি শুনেছ কীভাবে আমরা বিশাল বিশাল সাম্রাজ্য জয় করেছি এবং বিশৃখলাময় দূষিত পৃথিবীকে পরিশুদ্ধ করেছি। আমরা বিস্তীর্ণ ভূখণ্ড জয় করে সেখানকার সব মানুষকে হত্যা করেছি। তাই আমাদের আতংকের হাত থেকে তুমিও পালিয়ে বাঁচতে পারবে না।তুমি কোথায় লুকাবে? কোন রাস্তায় দিয়ে পালিয়ে যাবে? আমাদের ঘোড়াগুলো যেমন তেজী, আমাদের শরগুলোও তেমন তীক্ষ্ণ। আমাদের তরবারিগুলো বজ্রের মত আর আমাদের হৃদয় পর্বতের মত শক্ত। মরুবালুকার মত আমাদের সৈন্যসংখ্যাও গুণে শেষ করা যাবে না। না কোন দুর্গ আমাদের আটকাতে পারবে, না কোন সৈন্যদল পারবে আমাদের রুখতে। তোমার আল্লাহর কাছে তোমাদের ফরিয়াদ আমাদের বিরুদ্ধে কোন কাজেই আসবে না। কোন শোকের মাতম আমাদের হৃদয়কে স্পর্শ করতে পারবেনা, না অশ্রু গলাতে পারবে আমাদের মন। শুধু যারা প্রাণ ভিক্ষা চাইবে তারাই আমাদের হাত থেকে বাঁচতে পারবে।যুদ্ধের দাবানল ছড়িয়ে পড়ার আগেই তোমার উত্তর পাঠিয়ে দিও। কোন প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করলে তার ফল হবে ভয়ঙ্করতম। আমরা তোমাদের মসজিদ গুলো ভেঙ্গে চুরমার করে ফেলব আর তোমাদের সৃষ্টিকর্তার দুর্বলতা সবার সমানে প্রকাশ করব তারপর তোমাদের শিশু-বৃদ্ধ নির্বিশেষে সবাইকে হত্যা করব। মনে রেখ এই মুহুর্তে তোমরা আমদের একমাত্র শত্রু”।সাইফউদ্দিন কুতুজ ভালভাবেই জানতেন ইতিপূর্বে যারা বিনা যুদ্ধে মোঙ্গলদের ভয়ে আত্মসমর্পণ করেছিল তাঁদেরকী করুণ পরিণতি হয়েছিল। তাই কাপুরুষের মত বিনা যুদ্ধে অপমানের সাথে মারা পড়ার চেয়ে তিনি চাইলেন এই বর্বর বাহিনীকে মোকাবেলা করতে। উপরে উল্লেখ করা চিঠির উত্তরটা সুলতান কুতুজ দিয়েছিলেন মোঙ্গল দূতের শিরশ্ছেদ করে। এর ফলাফলটা সকলের কাছেই নিশ্চয়ই অনুমেয়।অবধারিতভাবে বেঁধে গেল যুদ্ধ। সুলতান কুতুজ প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন মোঙ্গলদের মোকাবেলা করার। ঠিক সেই সময়ে মিশরে মস্ত বড় স্কলার ছিলেন শেখ ইজ্জউদ্দিন আব্দুস সালাম । তিনি তার বক্তব্যে সুপষ্টভাবে সুলতান কুতুজের এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানালেন এবং জনগণকে দলে দলে কুতুজের বাহিনীতে যোগ দেওয়ার আহ্বান করলেন। এছাড়া সিরিয়া থেকে আরেক কিংবদন্তী কমান্ডার জহির উদ্দিন বাইবার্স কুতুজের সাথে যোগ দিলেন। এদিকে যাত্রা পথে হালাকু খবর পেলেন তাঁর ভাই গ্রেট খান মঙ্গেমারা গেছেন। তাই ৬ লক্ষ সৈন্যের প্রায় সাড়ে ১ লক্ষ নিজের সাথে নিয়ে তিনি মংগোলিয়া ফিরে গেলেন গ্রেট খানের শেষকৃত্যে যোগ দিতে। বাকিদের তিনি রেখে গেলেন তাঁর বিশ্বস্ত ও দক্ষ সেনাপতি কিতবুকার অধীনে মিশর আক্রমণের জন্য।যুদ্ধের অসাধারণ কৌশলদুর্ধর্ষ মোঙ্গল বাহিনীর মূল শক্তি ছিল তাঁদের ক্ষিপ্রতা এবং দ্রুতগামী ঘোড়াগুলো। এছাড়া ঘোড়ার উপর থেকে তীর ছুড়ে মারার বিশেষ দক্ষতা ছিল তাঁদের যা ইউরোপও এশিয়ার সেনাবাহিনীগুলোরছিলনা। মোঙ্গল ধনুকগুলো ছিল হালকা কিন্তু অসম্ভব শক্তিশালী। হালকা কিন্তু পাল্লা বেশী হওয়ায় ঘোড়ার উপর চড়েও ব্যবহার যেত ধনুকগুলো। মোঙ্গলরাদের আরেকটি স্ট্র্যাটেজি ছিল পর পর অনেকগুলো সারিতে বিন্যস্ত না হয়েই যতটা সম্ভব পাশাপাশি দাড়িয়ে হামলা চালানো যাতে সুযোগ বুঝে শত্রু বাহিনীকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলা যায়। সুলতান কুতুজ বুঝতে পারলেন চওড়া প্রান্তরে মোঙ্গলদের মুখোমুখি হওয়া মানে সাক্ষাৎ ধ্বংস ঢেকে আনা। তিনি মোঙ্গলদের আগে যুদ্ধ ক্ষেত্র পছন্দ করার সুযোগই দিতে চাইলেন না বরং নিজেই সৈন্য নিয়ে এগিয়ে গেলেন তাঁদের মোকাবেলা করার জন্য এবং বেছে নিলেন ফিলিস্তিনের তাবারিয়ার আইনজালুত প্রান্তর। আইন জালুত প্রান্তরটি এর আগে থেকেই ঐতিহাসিকভাবে বিখ্যাত। কারণ ওল্ড টেস্টামেন্টে ডেভিড ও গোলিয়াথের যে যুদ্ধের কথা বলা আছে সেটাও অনুষ্ঠিত হয়েছিল এই প্রান্তরেই।কুতুজ শুরুতেই তার সব সৈন্যদের দিয়ে আক্রমণ করালেন না বরং প্রথমে ছোট একটি দল পাঠিয়ে মোঙ্গল প্ররোচিত করলেন আগে হামলা করার। শুধু তাই নয় তিনি জানতেন তাঁর সিরীয় সৈন্যরা আগেও একবার মোঙ্গলদের কাছে হেরে পালিয়ে এসেছে তাই বিপদে পড়লে এরা আবারও পালাবে। যাতে পালাতে না পারে সেজন্য তিনি এদের রাখলেন সবার সামনে।যুদ্ধের বর্ণনাশুরুতে মোঙ্গলদের প্রবল আক্রমণের মুখে কুতুজের সৈন্যদের অবস্থা ছিল টালমাটাল। তখন সুলতান নিজে শিরস্ত্রাণ খুলে উঁচু জায়গা থেকে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে সৈন্যদের সাহস যোগালেন আর নিজেই ঝাঁপিয়ে পড়লেন সাধারণ সৈন্যদের মাঝে দৃষ্টান্ত স্থাপনের জন্য। যেহেতু প্রান্তরটি সরু তাই মোঙ্গলরা তাঁদের পুরনো সেই ট্যাক্টিক্স ব্যবহার করতে পারলনা। উপরন্তু সিরীয়সৈন্যদের ভেদকরে কুতুজের ব্যূহের ভেতরে প্রবেশ করার পর তারা মুখোমুখি হল কুতুজের এলিট বাহিনীর। এদিকে সামনের সারির সিরীয় সৈন্যদের জন্য তাঁরা পিছিয়েও আসতে পারছিলনা। সাথে সাথে দুই পাশ থেকে মোঙ্গলদের উপর নেমে আসল তীর বৃষ্টি। এক পর্যায়ে তাঁদের সেনাপতি কিতবুকা মারা যান। তারপরই ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে মোঙ্গল সেনাবাহিনী। পালিয়ে যেতে থাকে দিগ্বিদিক বিক্ষিপ্ত মোঙ্গলরা। কুতুজের সৈন্যরা প্রায় ৬০০ কিলোমিটার তাড়িয়ে শেষ হানাদার সৈন্যটিকেও হত্যা করে। এভাবেই মামলুক সৈন্যদের কাছে পরাজয় ঘটে অহংকারী, বর্বর ও জালিম হালাকু বাহিনীর। নিমিষেই চূর্ণ হয়ে যায় তাঁদের আকাশছোঁয়া দম্ভ।কেন আইন জালুতের যুদ্ধ এত গুরুত্বপূর্ণআইনজালুতের ঐতিহাসিক প্রান্তরে অবসান হয় মোঙ্গলদের অপরাজেয় মিথের। তাঁদের ভয়ে স্বদেশ থেকে পালিয়ে যেতে থাকা হাজার হাজার মানুষ একে একে আবার ফিরে আসতে শুরু করল। এই পরাজয়ের পরও মোঙ্গলরা যথেষ্ট শক্তিশালী ছিল কিন্তু আর কখনই আগের মত সেই মনোবল ফিরে পায়নি তারা। এরপরে মঙ্গোলরা ভারত আক্রামন করে বসে কিন্ত সুলতান আলাউদ্দিন খিলজির কাছে ব্যাপক লজ্জাজনক পরাজয় বরন করে তারা। ফলে মঙ্গোলদের ভারত দখল স্বপ্নই থেকে যায়। শুধু মধ্যপ্রাচ্যের নয় পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধগুলোর মধ্যে একটি হল আইন জালুতের যুদ্ধ কেননা এই যুদ্ধে সুলতান কুতুজ হেরে গেল উত্তর আফ্রিকা, স্পেন ও ইউরোপ পরিণত হত বাগদাদ, সমরখন্দ ও বেইজিং এর মত বধ্যভুমিতে। আদৌ মানব সভ্যতার ঐ ক্ষত সেরে উঠত কিনা সেই প্রশ্নের উত্তর কারও জানা নেই। তবে বর্বর মোঙ্গল বাহিনীকে রুখে দেওয়ার অনন্য কীর্তির প্রতিদান হিসাবে যে বিশ্ববাসী চিরকাল সুলতান সাইফউদ্দিন কুতুজকে মনে রাখবে সেটা বলে দেওয়া যায় নিঃসন্দেহে।
রুম্পা বিদ্রোহদক্ষিণ ভারতের গোদাবরী অঞ্চলের রুম্পা আদিবাসীদের সশস্ত্র বিদ্রোহ(১৮৭৮-১৮৮০)উনবিংশ শতকের সপ্তম দশকে মাদ্রাজ প্রদেশ জুড়ে প্রবল দুর্ভিক্ষে ৫০ লক্ষ মানুষ প্রান হারান। ১৮৭৬ এর ২৩ শে নভেম্বর অমৃত বাজার পত্রিকা এই দুর্ভিক্ষের কারণ হিসেবে বৃটিশ শাসকের শোষন, উদাসীনতাকে দায়ী করেছিল। জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর কলকাতাবাসীর কাছে দুর্ভিক্ষপীড়িতমানুষদের সাহায্যার্থে অর্থদানের আবেদন করলেও বিশেষ সাড়া পাওয়া যায়নি। এই ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের ভেতরেই উপুর্যপরি শোষন, বনাঞ্চল সংক্রান্ত বাধানিষেধ ও করের বোঝা দক্ষিণ ভারতে পর্বত-অরন্যচারীরুম্পা আদিবাসীদের ভেতর তীব্র ক্ষোভের জন্ম দেয়।রুম্পা সম্প্রদায় ছিল গোষ্ঠীমূলক। সমাজে সব কাজই একত্রিত সিদ্ধান্তে হতো। সুতরাং সকলেই মিলিতভাবে বিদ্রোহের সিদ্ধান্ত নেয়। এদের প্রধান নেতা ছিলেন চান্দ্রিয়া। লিংগম রেড্ডি, থুমন ধোরা প্রমুখ অন্যান্য নেতারাও বিদ্রোহ পরিচালনা করেন। তারা থানা আক্রমন, অগ্নিসংযোগ, সরকারী কর্মচারীদের হত্যা ও ভদ্রাচলম, বিশাখাপত্তনম তথা পূর্ব গোদাবরী অঞ্চলে নিজেদের অধিকার কায়েম করলে সশস্ত্র পুলিশবাহিনীর সাথে খন্ডযুদ্ধ হয়, উন্নত আগ্নেয়াস্ত্র ও স...
Comments
Post a Comment